মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই, ২০১৩

জাগরী / ইলা সরকার

 অনুরোধে বর্তমান সমাজের উপর একটি লেখা পোষ্ট করলাম ।

জাগরী

ইলা সরকার 

সময়ের আঘাত , উওপ্ত শ্বাস -
হাজারো প্রলোভন
চিনে নিতে দৃষ্টিহীন মন !
অযাচিত মুখোমুখি বিপ্লব
অপমৃত্যুর আর্তনাদ -
মোমের আলো হাঁটছে রাজপথ - ।

ঘন কোলাহলে ,
আগ্নেয়াস্ত্র নিশ্চিন্তে হেঁটে চলে !

ধরণী নির্বাক দর্শক
এক বদ্ধ ঘরে সংক্রমণে ।
নীতির কবলে সমাজের সর্বনাশ
আজ মৃত্যুর বিনিময়ে অর্থের সংলাপ !
কোথায় নির্ভীক চলার পথ ?

অনুভূতি সহানুভূতি ধুলোর বাসরে
কোষে কোষে -, শাসনতন্ত্রের ইন্দ্রজাল -।

রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০১৩

মন খারাপের গল্প / অলক বিশ্বাস /



কবি অলক বিশ্বাসের নতুন কাব্য-সংকলনের নাম ‘মন খারাপের গল্প’ । প্রকাশিত হয় এবছরের কলকাতা বইমেলায়, প্রকাশক বাংলার মুখ প্রকাশন । 

কবি অলক বিশ্বাস এই সময়ের এক প্রতিষ্ঠিত কবি, নানান পত্র-পত্রিকায় ও অন্তর্জাল পত্রিকায় তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়  । ‘মন খারাপের গল্প’ তাঁর পঞ্চম কাব্য-গ্রন্থ । প্রথম কাব্য সংকলন ‘জলবিছানা’ প্রকাশিত হয়েছিল ২০০৭এ । অলকের আগের কাব্য-গ্রন্থ ‘ঈশ্বরবাড়ি’ প্রকাশিত হয়েছিল জানুয়ারি ২০১২তে , সুতরাং ধরে নিতে পারি আলোচ্য গ্রন্থের কবিতাগুলির রচনাকাল ২০১২তেই ।

ছত্রিশটি কবিতা নিয়ে অলকের এই কবিতা সংকলন। আবার সাতচল্লিশটি কবিতার সংকলনও বলতে পারি । শুরুতেই – ‘মন খারাপের গল্প’ শিরোনামে যে দীর্ঘ কবিতাটি রেখেছেন, সেটি ১২টি খন্ড কবিতার মালা । ‘মন খারাপের গল্প’ নামটি বেশ ইঙ্গিতবাহী , এই নামটির মধ্যেই লুকিয়ে আছে বিষন্নতা , সংশয়, ক্লান্তি । আর এখান থেকেই পাঠক কবির বিষন্নতার, ক্লান্তির সূত্র সন্ধান করবেন ।

‘মন খারাপের গল্প’ নামে দীর্ঘ কবিতাটি অথবা তাঁর শরীরে গাঁথা ১২টি খন্ড কবিতার পংক্তিমালায়, কবির প্রচ্ছন্ন বিষাদ বোধ - “চাদের কাছে বেদনার কথা বলা বৃথা, তবুও - / আঁধারে লুকোলে সে কেন যে নিঃসঙ্গ হই খুঁজে খুঁজে মরি অতলান্ত আকাশে/কেন গো সই” ? ... সারাটা দিনের হিসেবের খাতা দেখি প্রত্যহ / ঝুড়ি ঝুড়ি মাখা অবসাদ, দিনশেষে ওড়ে বিশ্বময়” । তবুও এই কবিতাটি বা সংকলিত কবিতাগুলি কখনোই একান্ত নিজস্ব ‘বিষাদ গাথা’ হয়ে ওঠেনি । বরং “যে বৃষ্টি ভিজিয়েছিল, এতদিন পরেও থেকে গেছি ঋণী তার কাছে / সে কারণেই এই গল্প বলা । একা একা পথ চলা”। সেই পথেই কবি দেখেন “নতুন ধানের গন্ধে বাঁধ ভাঙা হাওয়া লেখে নতুন স্বরবর্ণ”...কবি দেখেন “রাজপথে ঘুম ভাঙা ইতিহাস । সমবেত মানুষেরা হাসছে-কাঁদছে-গাইছে হৃদয়ের কলি” । তাহলে ‘মন খারাপের গল্প’কে কবির একান্ত ব্যক্তিক বিষাদগাথা বলি কি করে !

সংকলনটিতে ‘গল্পকথা’ শিরোনামে নটি বাক্যের অতি ক্ষুদ্র ভুমিকায় কবি বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত জানিয়েছেন “মন খারাপের গল্প’র মূল ভাবনা প্রেম । এই প্রেমের সঙ্গে কবি কোথাও কোথাও জারিত করেছেন প্রকৃতিকে , লিপ্সাকে এবং গোপন পাপকেও” । কবিতাগুলির মূল ভাবনা প্রেম অবশ্যই, তা কিন্তু ব্যক্তিক প্রেম নয় বরং প্রকৃতির রহস্যের মাঝে আমাদের পারিপার্শ্ব ও চলমান সময়ের অনুষঙ্গে মহত্তর জীবনের যে বোধ, ব্যঞ্জনাময় পংক্তিমালায় উজাড় করা প্রেম সেই বোধ’এর জন্যেও । আমি এভাবেই বুঝেছি সংকলিত কবিতাগুলিকে । “বিষাদ যেটুকু নিজেকে ভেঙে / সুচতুর গিলেছে দেহতাপ,...”(‘চাদর’)। তবুও কবির প্রত্যয়ী উচ্চারণ “যে মিছিলে হেঁটে হেঁটে হয়েছি বড়ো / অন্ধকার সমুদ্র পার করে আমাকে দিয়েছে রদ্দুর / সেই গঙ্গায় রেখেছি বিশ্বাস” (‘শঙ্খচূড়’) । সুতরাং ‘প্রকৃতি’ , ‘লিপ্সা’ বা ‘গোপন পাপ’ সংকলিত কবিতাগুলির ভাব বীজ নয় । বরং বইটির শেষ প্রচ্ছদ-লিপির বয়ানটিকেই মান্যতা দেব,' যা থেকে জানতে পারি   “কুয়াশা রোদ্দুর ভেঙে পলে পলে স্বপ্নের সেতু ছোঁয়া । এই ভাবে সকাল-দুপুর সন্ধ্যায় নিজেকে জড়ানো । দুচোখের ছবি ছবি নৈঃশব্দ চৌচির করে । কবি থাকেন মানুষের কাছাকাছি”। এখানেই যেমন কবির মন খারাপের উপকরণ , এখানেই কবির অন্ধকার ভেঙে দেখা আলোর বীজ । কবি বলেন “অন্ধকার ভেঙে দেখি যাকে দিয়েছি সব / হয়েছে আলোর বীজ, আমি কৌরব” (‘কৌরব’) । আমি এ ভাবেই কবিতাগুলিকে বুঝতে চেয়েছি ।

বস্তুত আমরা কেউই ভালো নেই ।  না কি ভালো আছি ? এই রকম ভালো থাকা -  প্রয়াত পূর্নেন্দু পত্রীর পংক্তিতে যেমন, “চারকোণা সংসারের চতুর্দিকে গ্রীল এঁটে খুশী ...যে বাতাসে কাশের কথ্বক / এয়ারকুলারে সেই বাতাসের বাসী গন্ধ পেয়ে বড় খুশী” । আমাদের বিষণ্ণতা লেখেন অলক একই রকম ভাবে । “ ঘুমে আচ্ছন্ন মানুষ জানালায় হাওয়া খায় বটে / দক্ষিণের সেই পথে, ... কালবৈশাখী আসে না এখানে” । (‘অর্ধেক তুমি’) । সংবেদনশীল কবি আমাদের যাপনের বিষাদ গাথা লিখেছেন (না কি এঁকেছেন ?)

পাঠক কবিতার কাছে আসেন শব্দ সুষমার নিবিড় আকর্ষণে । আলোচ্য সংকলনটিতে পাঠক বারবার ফিরে যেতে চাইবেন কবিতার শরীরে ধরা নিবিড় অর্থময় অনেক পংক্তির কাছে, ‘ডুবু ডুবু সূর্য ছুঁয়ে যে মানুষ হারিয়েছে সাগর গভীরে’ (পয়লা বৈশাখ), ‘ভালোবাসা কাছে এলে সমুদ্র দূরে চলে যায়’(ভালোবাসা কাছে এলে), ‘যে শব্দেরা মিথ্যা কথা বলে / ধর্মকথা অকারণে/রদ্দুর ঠেলে দেয় দূরে’ (ঘুড়ি),’জোতদার সাজায় তোমাকে পঁচিশে বৈশাখ’ (পঁচিশে বৈশাখ), এ গান সাহস লেখে, হৃদয়ের পতাকা ওড়ায়’মে মাসের গান) । এরকম অনেক  ব্যঞ্জনাময় পংক্তি্র গভীরে ডুব দেবেন পাঠক ।
‘মন খারাপের গল্প’ আমাদের একলা যাপনের বিষাদগাথা এবং একই সঙ্গে বিষন্নতা সংশয়, ক্লান্তি কে অতিক্রম করারও কাব্যগাথা । আমি একাত্ম হই কবির ভাষায় – “মৃত্তিকা দিয়েছে জল, মহাভারতের ভাঁজে ভাঁজে ফসিল কথা/এত ফুল এত ফল হৃদয় তরঙ্গে / স্পর্ধিত আমার পাহাড়” (‘স্বদেশ’) ।


বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন মেঘ অদিতি । মেঘ অদিতি অত্যন্ত দক্ষ ও কুশলী শিল্পী তাঁর আঁকা উজ্বল প্রচ্ছদ বইটির আকর্ষণ বাড়িয়েছে । পরিপাটি মুদ্রনে বইটির মূল্য ৬৫টাকা ।

প্রথম কবিতা

এসো, এসো ঝর্ণাতলায় করি স্নান

এমন সুগন্ধবেলা ফুল ছুঁয়ে ছুঁয়ে

সাঁতারে ছোটাব জল

নদী হয়ে এসো নীল ...

তাকে রাখা ইচ্ছেকে বলো

ওখানে ফুটুক ফুল এ সময়

আমাদের চারপাশ সুশোভিত

মৌমাছি আয় আয় ...

সাজানো সংসারে পূর্ণ চাঁদের আলো

দুচোখে সমুদ্রে রাত জাগা রাত পোড়ে

সোহাগ নৌকা হারাবে হারাবে উদবেল

ঠোটে রেখে যা চুমু আজ অভিসারে ...

খুলে দাও বাঁশরী তুলোর বালিশ

বিষণ্ণ ভিজুক বৃষ্টিতে,

প্লাবন নদীর জলে

আমার প্রথম কবিতা ... ।

বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০১৩

মখছুছ চৌধুরী / আমি যদি নয়ন জলে ভাসি,



মখছুছ চৌধুরী
আমি যদি নয়ন জলে ভাসি, 
তাতে, তোমার কিবা আসে যায় ।
তুমি তোমার পথে যাও এগিয়ে,
আমার, সঙ্গী হবার নেইতো দায় ।

তোমার আমার একই পথের,
ধরতে পাড়ি, নেই কথা ।
তুমি, তোমার পথে হও সূখী তায়,
আমার নেইতো দায় ব্যাথা ।

আমি একলা পথে চলবো,
আমার, যেদিক দুটো নয়ন চায় ।
সেটি, তোমার পথে না মিলিলে,
আমার, কিছুই করার নেই উপায়

সোমবার, ২২ জুলাই, ২০১৩

এস হে সুন্দর চির মনোহর ফুল্ল কুসুম সাজে, মখছুছ চৌধুরী

 
এস হে সুন্দর চির মনোহর ফুল্ল কুসুম সাজে,
এস হে দয়িত চির আকাঙ্কিত হৃদয় আসন মাঝে ।

এস কূঞ্জ বিতানে পূষ্প শয়ানে মত্ত মধুপ সম,
এস প্রিয়তম চির মনোরম রুপায়িত অনুপম ।
এস নৃত্য চপল আনন্দ বিভোল রম্য উজ্জল সাজে ।

তব-স্নিগ্ধ পরশে সূরভী বিকাশে জুড়াও তপিত হিয়া,
ঢালো সূধা ঢালো তৃষিত আকূল চিত্ত উঠুক ভরিয়া,
নিত্য নতুন লীলা নিকেতন রচ এ হৃদয় মাঝে ।

এ শুভ লগনে পূণ্য মিলনে বাজুক ঐক্যতান,
হৃদয়ে হৃদয়ে ছুটুক বিজলী প্রাণে মিশে থাক প্রাণ,
সীমার ভিতরে অসীমের সূর বাজে যেন সদা বাজে
মখছুছ চৌধুরী
 

সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০১৩

ভূতের গ্রাম-পঞ্চায়েত ভোট ....সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি



ভূতের গ্রাম-পঞ্চায়েত ভোট
***************************

গভীর রাতে বিশাল বটের তলায় জমায়েত,
ভূতেরা সব ঠিক করেছে,গড়বে পঞ্চায়েত।
এতদিন তো ব্রহ্মদৈত্য করতো মাতব্বরি,
স্বজন পোষণ,ধনীর তোষণ,নানান কেলেঙ্কারি।
ভূতের সমাজ ঠিক করে তাই,মানুষেরই মত,
গড়বে নতুন গ্রামসভা;ভূত করে মনোনীত।
নানা গ্রামের প্রধান পদে একটি ক'রে আসন,
বেছে নিতে ভূত-প্রেতেরা লড়বে নির্বাচন।

আষাঢ় মাসের অমাবস্যার রাতে হবে ভোট,
নির্বাচিত গ্রাম প্রধানের হবে নতুন জোট।
জোটের নেতা হবেন যিনি,তিনিই হবেন রাজা,
তার কথা যে শুনবে না,সে পাবে কঠোর সাজা।
ভূত-পেত্নীর থাকবে না ভেদ,সমান অধিকার,
প্রার্থী হয়ে ভোটে দলের করবে সে প্রচার।
কলার পাতায় নানা দলের প্রতীক হবে ছাপা,
প্রতি ভূতের একখানি ভোট,হিসাব করে মাপা।

বামপন্থী ব্রহ্মদৈত্য,প্রতীক 'মাথার খুলি',
হেঁড়ে গলায় করলো প্রচার,এ গলি,সে গলি।
ডানপন্থী শাঁখচুন্নী,প্রতীক 'বুনো ফুল',
এমন ভীষণ করলো প্রচার,জাগলো হুলুস্থূল।
সমাজবাদী স্কন্ধকাটা-র প্রতীক 'গাছের ডাল',
ভোট প্রচারে গিয়ে কেবল করলো গালাগাল।
উপজাতির একনড়ে ভূত,প্রতীক 'পায়ের হাড়',
ভয় দেখালো,ভোট না দিলে,দেবে বেদম মার।

গেছো ভূত আর মেছো ভূত,আর গো-ভূতেরা মিলে,
দলের প্রতীক না পেয়ে শেষ দাঁড়ালো নির্দলে।
ঝোপে-ঝাড়ে,মাঠ-ভাগাড়ে,চললো প্রচার টানা,
ফিসফিসিয়ে লোভ দেখালো,ভরসা দিল নানা।
সবার মুখে একই কথা,"লড়িয়ে দিয়ে জান,
করবো সকল ভূতের সেবা,যে যতটা চান।
ভূত দাদারা,ভূত ভায়েরা,পেত্নী মা আর বোন,
ভোট টি দিয়ে জয়ী করুন,রাখছি আবেদন।"

অবশেষে আষাঢ় মাসের নির্ধারিত রাতে,
হাজার হাজার ভূত-পেত্নী দাঁড়িয়ে লাইনেতে,
একে একে প্রতীকেতে রক্তে দিয়ে ছাপ,
রাত দুপুরে করলো যে শেষ ভোটের প্রথম ধাপ।
শেষ রাতেত,গণনাতে এটাই গেল দেখা,
শাঁখচুন্নী সবার বেশী ভোট পেয়েছে একা।
জোটের নেত্রী হয়ে তিনি,হলেন ভূতের রাণী,
তার শাসনে ভূতেরা সব সুখী হবেন জানি।

বলতে পারো,এ সব খবর আমি পেলাম কোথায়?
খোলসা করে সত্যি কথা বলছি তবে তোমায়।
বর্ষা রাতের ঠাণ্ডা হাওয়ায় ঘুমিয়ে ছিলাম একা,
সেই সুযোগে স্বপ্নে আমায় দিলেন তারা দেখা।
তাদের রাজ্যে ঘটছে যা তার ধারা বিবরণী,
টাটকা,তাজা দেখিয়ে দিলেন,কি ভেবে কি জানি !
লেখক ছাড়া তাদের কথা বলার কে আর আছে,
ভূতেরা তো সব শিখেছে,মানুষেরই কাছে।

***********************************************
     সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি
***********************************************

রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৩

আজ শ্রাবনের ধারার মত অশ্রু ঝরে / ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী ........১৪.০৭.২০১৩ /রাত ০৯.৫৩




আজ শ্রাবনের ধারার মত অশ্রু ঝরে

তোমার বিরহের বেদনা তে রক্ত ঝরে

মুখে নেই ভাষা আছে সুধু ভালোবাসা

বুঝি আমি তোমার চোখের যে ভাষা ...... (১)


অশনি সঙ্কেত ওই আকাশে গুরু গম্ভীর নাদে

মেঘের পরশে আজ বাতাস যে কাঁদে

তবু ঝরে মোর আঁখি হতে অবিশ্রান্ত ধারা

কম্পিল যে আজ মৃদু তালে ধরনি ধরা ......... (২)


তোমারি ছবি দেখি মনের আঙ্গিনায়

ভুলিনিগো তোমারে ভুলিনি যে হায়


বিরহ যাতনা যে আর নাহি সয়

স্মৃতিটুকু রেখেছি মনে এই ভরসায় 


ফিরিয়া আসিবে তুমি সেই ভরসায় .............( ৩ )


আজ শ্রাবনের ধারার মত অশ্রু ঝরে

তোমার বিরহের বেদনা তে রক্ত ঝরে
.
ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী ........১৪.০৭.২০১৩ /রাত ০৯.৫৩ 


অনেক দিনের মনের মানুষ যেন এলে কে
কোন্ ভুলে-যাওয়া বসন্ত থেকে ।।
যা-কিছু সব গেছ ফেলে খুঁজতে এলে হৃদয়ে,
পথ চিনেছ চেনা ফুলের চিহ্ন দেখে ।।
বুঝি মনে তোমার আছে আশা-
আমার ব্যথায় তোমার মিলবে বাসা ।
দেখতে এলে সেই-যে বীণা বাজে কিনা হৃদয়ে,
তারগুলি তার ধুলায় ধুলায় গেছে কি ঢেকে ।।

মখছুছ চৌধুরী :: সূ-প্রভাত ::


:: সূ-প্রভাত ::
**********

সূ-প্রভাত সূ-প্রভাত
কেটেছে কলুষ আধার রাত ।
পূর্ব গগনে, নবীন বরণে-
হয়েছে ঊষার সূত্রপাত ।
সূ-প্রভাত ।

খোল খোল দ্বার খোল সবে,
এসো এসো নব কলরবে,
ঝরা শেফালী কামিনীরা-
দেখো- করছে নয়নপাত ।
সূ-প্রভাত ।

কর হাত মুখ প্রক্ষালন,
আননে পর হে নব বসন,
ঝাকিয়ে অঙ্গ, অলস ভাঙ্গো-
সকলে ঊষার সাথ ।
সূ-প্রভাত ।

দেখো ফুল পাখি প্রিয় রবে,
ডাকে আয় আয় আয় সবে,
নবীন রুপে, বিশ্ব ভূপে-
সাজাতে নব প্রভাত ।
সূ-প্রভাত ।

জপ অবিরাম প্রভূর নাম,
গুরুজনে যত কর প্রণাম ।
নীতি'র ধর্মে, পূণ্য কর্মে-
কর হে দিনাতিপাত ।
সূ-প্রভাত ।

দিকে দিকে সবে ছড়িয়ে যাও,
আপন রিজিক কুড়িয়ে নাও ।
গাও হে শোকর, আপন প্রভূর-
সতত দিবস রাত ।
সূ-প্রভাত ।

দীনজনে যত করো দয়া,
অনাথেরে দাও স্নেহ মায়া ।
মানবে সেবা, করিবে যেবা-
রবে সে প্রভূর সাথ ।
সূ-প্রভাত ।

হৃদি-
পূর্ণ রাখো হে ভক্তিতে,
পাবে প্রতিদান মুক্তিতে ।
ঈমানের বল, করিবে সফল-
দুনিয়া ও আখিরাত ।
সূ-প্রভাত ।

বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই, ২০১৩

কবি ও কবিতা : আহা , বেশ বেশ !!! /অভিলাষা দাশগুপ্ত আদক





কলম বেয়ে শব্দ এলো,
এলো কবিতার রেশ
কবিমনে  ভাবনা এলো
আহা ,বেশ বেশ !!!

ভর দুপুরে গরমকালে
পুড়ছে যখন দেশ
কবির লেখায় জমছে বরফ
আহা ,বেশ বেশ !!!

ফাগুন এলোপলাশ এলো,
জুবুথুবু শীত শেষ
কবির কলম আগুন ছোটায়,
আহা ,বেশ বেশ !!!

বাঁধনহারা স্বপ্ন এলো,
ঘুচলো ভেদ বিদ্বেষ
সুখের প্রাণ গড়ের মাঠ,
আহা ,বেশ বেশ !!!

পীরিত রঙ্গে মন রাঙ্গলো

ফ্যাচাংয়ের নেই শেষ
খাতার পরে খাতা ফুরায়,
আহা ,বেশ বেশ !!!

ছন্দ গানেকবির মনে,
লাগছে দোলা বেশ
কবিতার বেগ চাগিয়ে ওঠে,
আহা ,বেশ বেশ !!!

মরছে কবি কলম পিষে,
ব্যাকরণের দিন শেষ
কাব্যলক্ষ্মীর ভাঁড়ে ভবানী,
আহা ,বেশ বেশ !!!

লাগামছাড়া কথার মালা,
দিচ্ছে কথায় ঠেস
’ লিখলেই কবিতা গজায়,
আহা ,বেশ বেশ !!!

রবিবার, ৭ জুলাই, ২০১৩

|| আয় বৃষ্টি ঝেঁপে || Shankar Bandopadhya

|| আয় বৃষ্টি ঝেঁপে ||

বর্ষা আসব আসব করেও আসছে না
জমাট বাঁধা মেঘ বুকে নিয়ে গোমড়ামুখো আকাশ
স্বতঃস্ফূর্ত বর্ষণ নেই, শুধু
মাঝে মাঝে চোখের জলের মত
গড়িয়ে পড়া দু-এক ফোঁটা মুক্তো ।

বৃষ্টি আমায় মাতাল করে
মনে নেশা ধরায়, চোখে রঙ দেয়
অনেকদিন আগে দেখা সেই মেয়েটাকে মনে পড়ে
যে বৃষ্টি মেখে হাতে তালি দিয়ে উঠেছিল ।
জলখেলা ভালবাসত মেয়েটা
সারা শরীরে জল ছড়িয়ে হেসে উঠত খিলখিল করে
তার সাথে বর্ষাস্নাত হয়েছি কতবার
হাতে হাত রেখে কতবার বলেছি – আয় বৃষ্টি ঝেঁপে......

বৃষ্টির প্রত্যেকটা ফোঁটা সে উপভোগ করতো
তার অনুভূতিপ্রবণ সারা অঙ্গ দিয়ে,
এক একটা ফোঁটা এসে পড়ত
তার শরীরের এক এক অংশে
আর সে শিউরে শিউরে উঠত, যেন
কোন পুরুষের গোপন স্পর্শ,
যেন কে তৃষিত ঠোঁটে আদর করছে তাকে ।
বর্ষা লাবণ্যময়ী হোত তার বিভঙ্গে,
তার বৃড়াবনত তনুর সৌকর্যে
শ্রাবণ উন্মাদ হোত বিপুল বর্ষণে
আমি দেখতাম, মাতাল হতাম আর বলতাম –
আয় বৃষ্টি ঝেঁপে......

এমন দীন বর্ষণ ভাললাগেনা আমার
উন্মত্ত বর্ষণ চাই এখন
বিরামহীন, অবিশ্রান্ত, শুধু ঝরবে আর ঝরবে
ধুয়ে দেবে সমস্ত মালিন্য, সমস্ত ক্লেদ
মেয়েটা আবার হেসে উঠবে খিল-খিল করে ।

সেদিনের সে, এখন পরিপূর্ণ নারী
প্রস্তুত হয়েছে নতুন সাজে
নাচবে বলে, হাততালি দেবে বলে
এখন কি তোর অমন কৃপণ হওয়া মানায় !

আয় না বৃষ্টি, ঝেঁপে.........

শনিবার, ৬ জুলাই, ২০১৩

আলি প্রানের লেখা কবিতা। রাতের আঁধারে আমি টের পাই

রাতের আঁধারে আমি টের পাই
বুকের ভেতরে তপ্ত দিবাকর
গ্রাসীছে প্রেমের গ্রহিকাকে
কালোগহ্বরে ছুড়ে ফেলি নিজেকে
দূরানুভূতিতে টের পাই
আমি নিঃস্ব নই, বুকে রয়ে গেছে
তোমার ভালোবাসার আবেশ
আলোকিত শ্মশানের শেষ মাথায়
জ্বালিয়ে আপন প্রভাতীর চিতা
জীবনে এনেছি চির সন্ধ্যা
নিশিরে বড্ড কাছে চাই, ঘৃণা করি চাঁদকে
আলো দেয় বলে
ওগো, অমানিষাই আমার সব
কৃষ্ণকায়ার জটিলতায়
নিরতঙ্ক মনের সেচ্চাচারিতায়
গ্রহান্তরের পথে ছুটছি
থামেনি হৃদয় দমেনি তেজ
মৃত্যুভয় করেনি আলিঙ্গন
আঁধারেরে বড় ভালোবাসি
কারণ প্রভাতী আমার নাই
প্রেমাতঙ্কের দিনে স্মরণে রাখি
প্রণয় পার্থীর আকুল প্রার্থণা
নিয়তি নামে অভিষাপ ঢালি
ললনা জাতির মোহনীয়তাকে
অথচ ভুলটাই আমার
স্বকীয়তার নির্লজ্জতা ঢাকতে
প্রভাতীদের অভিষাপ দিয়ে যাই