বৃহস্পতিবার, ৩০ আগস্ট, ২০১২



সীতাহরণ 

একরাশ মেয়েমদ্দ উঠেছিল ট্রেনে 
ধানকাটার মরশুম ওদের এনেছিল টেনে 
রান্নার বাসন থেকে চিকচিকি ব্যাগ
তারই মাঝে একচিলতে জায়গা নিয়ে
গল্প জুড়ি ওদের সঙ্গে... 

ঘর কথায় তোমাদের?
‘হেই, পুরুল্যা বটে’!
জবাব আসে একজনের। 

তার মানে, আদিবাসী...
’আমি নাই জানি, উয়ারাকে জানে’
ইঙ্গিত ছেলেদের প্রতি
‘কি করে জাইনব্য পড়াশুনা নাই ত’ 
সলাজ হেসে জানায় মেয়েটি।

মানে জান, আদিবাসী...
যাকে বলি, মাথায় তার ঝুঁটি
বড় বড় চোখ
ঝকঝকে দাঁত
বললে, ‘জানি, পত্থম বটি’
অর্থাৎ প্রথম অধিবাসী।

বাঃ, কি করে জানলে?
‘মাস্টার বল্যেক...’
তুমিও কি...
বাধা দেয় ছেলেটি--
‘হেই বাবা,পুরুল্যা ত বটি!
কি কর তুমি?
‘ছউ লাচ লাচি...’
চাষের কাজ আবার ছউ এর নাচন!
উৎসাহে ভাল করে বসি, কি সাজ তুমি?
‘পত্থমে রাম, এখন রাবণ’

প্রথমেই রাম...! 
‘আমরাকে রাজ্জা ত, মাসটার বল্যেক 
সীতাট মরয়ে গেল,
এখন রাবণ হল্যেক’ 

সীতা মরে গেল বলে রাব... 

‘ই সীতাট নাই জানে কিছু
উ-সীতাট ভাল ছিল্যেক
ই-শালাকে ধরে লিয়ে যাব...’ 
বলেই হা হা হাসি হাসে মুখ নিচু 

রামায়ণের গল্প জান?
‘উ আমরাকে সবাই জানি’ 

সীতাকে চুরি কর--কৌতুকে বলি

‘তুমাদের সীতাকে রাবন ধরেছিল্যি
আমরাকে নাই লেয়
লিজেই গেছল্য,এমনি শুনি’ 

রাবণ তো চুরি করেছিল--আবার বলি

‘ই শালা সীতাট নিজেই বেরহায় যায়
মাসটারের দাগট নাই দ্যাখে 
উ আমরাকে সীতার মতন... 
রামের চ্যাঁইয়ে উয়ার কাছে ভাল রাবণ 
বলুন ক্যানে, 
তবে,রাবণের দোষ ট কি’!!

ঝর্না চ্যাটার্জি 

ভুলে গেছি


কতো স্থাপত্বের উপর লিখেছি নাম
কতো ভাস্কর্যে এঁকেছি ছবি
কতো মনে লিখেছি কবিতা
পত্বন দেখেছি , পতনও ।
এসেছে নতুন প্রভাত কতো,
নোনা পডেছে ভালবাসায় ;
ধীরে ধীরে , জন্মান্তরে ।

কাল গেছে,
সাম্রাজ্যবাদী ধ্বংস এনেছে,
সাথে তুমিও
যাদুঘরে স্থানচ্যুতি শেষে ।

মনে পডে, ইঁট পুড়িয়ে লেখা
আমার পাশে তোমার নাম ।

বিভক্ত সমাজের আলিঙ্গন,
একাকি কতো কাছে আসা
পোড়া বাড়ির পিছনে ছুটে যাওয়া ।

ভুলে গেছি আমি,
বৃষ্টির নিচে জরিয়ে ধরা
ঠোঁটে ঠোঁট রাখা খানিকক্ষণ,
শুকিয়ে যাওয়া বনে সুখের লুকোচুরি খেলা
ভুলে গেছি........

সোমবার, ২০ আগস্ট, ২০১২

স্বাদ হীন, স্বাদ হীন



স্বাদ হীন, স্বাদ হীন বিভীষিকাময় দীনহীন দেশে

ক্ষণে ক্ষণে ডুবিছে জন্মভূমি ঘোর অন্ধকারে,

কোন মহাবীর করিবে উদ্ধার চেনা শোণিত বেশে
,
অভাগা দেশের ঘুচাবে কে দুঃখ, বাঁধবে কে পূণ্যডোরে।

জ্ঞানের আলোক জ্বালাবে কে চেতনাহীন পাষাণে 

দিন রজনী বৃথা আশাভরে অসহায় হীনপরানে।। 

তন্ময় কর্মকার

রবিবার, ১৯ আগস্ট, ২০১২

কবি সুকান্ত তখন মৃত্যু শয্যায়


কবি সুকান্ত তখন মৃত্যু শয্যায় । অগ্রজ সাহিত্যিক মাণিক বন্দ্যপাধ্যায় লিখলেন -
সুকান্ত তখন মৃত্যু শয্যায় - অগ্রজ সাহিত্যিক মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায় লিখলেন --

চৈত্রের পরিচয়ে তুমি সূর্য হতে চেয়েছো সুকান্ত
তোমার যক্ষা হয়েছে ।
তোমার তরুণ রশ্মি দেখে ভেবেছিলাম বাঁচা গেলো
কবিও পেয়ে গেল নতুন যুগ ।
এও বুঝি ষড়যন্ত্র রাত্রিজ মেঘের
ঊষায় যারা আজ
দুর্যোগ ঘটাল। বুলেট ছেঁদা করে দিচ্ছে
তোমার উলং ছেলেটার বুক,
তোমার বুক চিরে খাচ্ছে টিবি কীট
দুর্যোগের ঘন কালো মেঘ ছিঁড়ে কেটে
আমরা চাঁদা তুলে মারবো সব কীট
বুলেটের রক্তিম পঞ্চমে
ছিঁড়বে ঘাতকের মিথ্যা আকাশ ?
কে গাইবে জয়গান ?
বশন্তে কোকিল কেশে কেশে রক্ত তুলবে
সে কিসের বসন্ত ?”


----
মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায়

শনিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১২

বৃস্টি ভেজা সকালটাকে দেখতে লাগে ভাল


বৃস্টি ভেজা সকালটাকে দেখতে লাগে ভাল
 
বৃস্টি ভেজা সকালটাকে দেখতে লাগে  ভাল

মেঘের ভেতর সূর্য্য যে ওই দিচ্ছে কত আলো

থমকে দাঁড়াই দৃশ্য পটে সেই দৃশ্য দেখে

রোদের কোলে ঘুমিয়ে পডি মহানিদ্রার ডাকে

বিদ্যুতের ওই ঝল্কানিতে বুকটা কেন কাঁপে 
 
আসছে যে ওই বৃস্টি আবার শীতল হাওয়া সোঁপে

ঝর ঝরিয়ে বৃস্টি নামে আবার মেঘলা রাতে

সন্ সনিয়ে  বইছে হাওয়া এই মাধবি রাতে

শীতল পরশ লাগে প্রানে আবেগ আসে মনে

বুঝিয়ে দিল বৃস্টি টা যে আসেনি অকারনে  


               ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জ্জী /১৯.০৮.২০১২ /সকাল ১০ টা 

শুক্রবার, ১৭ আগস্ট, ২০১২

আজ রাতে তোমাকে



  
আজ রাতে তোমাকে

আজ রাতে তোমাকে দেখতে লাগে ভাল

মন  উডে যায় চোলে যাবে কিনা বল

চাঁদযে  তাই ডাকছে  ওই হাঁসছে কেন বল

হঁসলে তাই দেখলে ওই লাগে কি যে ভাল

উডবো  দুজনে  যাব  সঙ্গে  উডতে লাগে ভ

আজ রাতে তোমাকে দেখতে লাগে ভাল

মন  উডে যায় চোলে যাবে কিনা বল......১

বৃস্টি  নেই  বাদলা নেই আকাশ  যে কি ভাল

গাইছে  মন  উডতে তাই  হারিয়ে  জাব চল

চাঁদযে  তাই  ডাকছে  ওই হাঁসছে কেন বল...২

যাই  চল  তাই ভাল সময় গেল  চোলে

আজ রাতে তোমাকে দেখতে লাগে ভাল

মন  উডে যায় চোলে যাবে কিনা বল......৩

বৃস্টি  নেই  বাদলা নেই আকাশ  যে কি ভাল

গাইছে  মন  উডতে তাই  হারিয়ে  যাব চল

আজ রাতে তোমাকে দেখতে লাগে ভাল 

বুধবার, ১৫ আগস্ট, ২০১২

জীবনের রাস্তা


জীবনের রাস্তা ঃ  

অনেকটা পথ এলাম হেঁটে
তোমার কথা শুনতে শুনতে  
জদিও তুমি আমারি পাসে
বুঝিনি তোমায় অবশেষে  
খুব্ধ হলে তুমি যখন
বোঝাতে হয় তোমায় তখন
রাগ অভিমান সব ই আছে
তোবুও তুমি আমারি কাছে
নিঃসঙ্গ জীবন বড়ই এক
রাস্তাগুলো আঙ্কাবাঙ্কা
চলতে হবে অনেকটা পথ 
আমার সঙ্গে নাও সেই শপথ
 
ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জ্জী ।

হৃদয়ের ভালবাষা

হৃদয়ের ভালবাষা র গান


  

সে ফুল নয় মন আমার 
যেন দূরে ছুঁডে ফেলনা আমায়
আমি আছি পাসে তোমার
যত ব্যাথা হৃদয়ের আমার 
সব ভুলে গেছি এবার 
যেন দূরে ফেলনা আমায়
আমি আছি পাসেই তোমার
রজনি পেরিয়ে গেছে
তারারা গেছে চোলে
চাঁদ ওই নিল আকাশে
ঘুমল বলে
তোমারি স্মৃতির টানে
রই রাত জেগে
ছবি দেখি ওই আকাশে
তোমারি তুলির টানে
সাগর পাডে বসে ভাবি
তোমারি কত কথা
তোমারি গাথা যে গায়
মনের উর্মিমালা
বালুকা ভরা তটে
মিস্টি জোছনা
কোমল এ হৃদয়ের
ভালবাশা ভরা।

ত্রিভুবনজিৎ  মুখার্জ্জী। 

সকালের চা


সকালের চা 

ভরা পেয়ালায় তৃপ্ত মনে শেষ চুমুকেই মহা শুন্যতা
ধুমায়িত উস্ন শিহরন ক্ষনে মনের কাটায় বিষন্নতা
উদবুদ্ধ হলাম খানিক ক্ষনে কাটিয়ে দিলাম নিরবতা
যত আলশ্য নেই অবশ্য সকালের এই স্তব্ধতা
এক পেয়ালা চা অবশ্য পুলক অনুভবের পুর্ণতা
এর অন্যথা জীবন ব্যর্থ নেই তাতে কোন পুর্ণতা।

ত্রিভুবনজিৎ


মঙ্গলবার, ৭ আগস্ট, ২০১২

তিন ছড়াক্কা দেবীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়

তিন ছড়াক্কা
দেবীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়
১ 
আশুবাবু এবং হাসুবাবু 
দুই প্রতিবেশী, 
কার ক্ষতি বেশি 
সে কথায় না গিয়ে 
বরং দি’ জানিয়ে 
এ দু’জনেই বেশ কাবু।
২ 
শ্রীলংকার শ্রীজয়বর্ধন
খেলছেন আই-পি-এল
দু’পেয়ালা চা পিয়ে
পরপর ছক্কা
পরের বলেই অক্কা,
এবং চীয়ার-গার্লদের হর্ষবর্ধন।

সাতাশের সতীশ সাউ
সতেরোর প্রেমে
ভয়ানক ঘেমে
শেষ অব্‌দি বলে,
থাক্‌গে তাহলে
খেয়ে নাও,জুড়োচ্ছে চাউ

সোমবার, ৬ আগস্ট, ২০১২

আজ বাইশে শ্রাবন ঝর্না চ্যাটার্জ্জি


আজ বাইশে

কখনো লিখব, ভাবিনি তেমন
শুধু গেয়েছি তোমার গান,
পড়েছি তোমার কবিতা
আর চোখের জলে ভেসেছি
বাইশে শ্রাবণ।

তবুও অক্ষরমালা বৃত্তাকার হয়ে
পাক দেয় আমার চারিদিকে
কখনো তোমার ছবি দেখে
কখনও তোমার গান শুনে

যাবার দিনে নাকাল হয়েছিলে
সেকথা সবাই মানে...

উড়িয়ে নিয়ে, ভাসিয়ে নিয়ে
গিয়েছিল তোমায়
রাগ, দুঃখ চাপা ছিল না কিছুই--

হয়েছে আলোচনা বিস্তর
চলেছে চাপানউতোর

তবু, যখন দেখি তোমার সেই ছবি
মেঘের অপর ভেসে যাওয়া কবি...
মনে হয়,
সত্যি তুমি বিশ্বকবি আজ
আকাশ-ধরার মধ্যে তোমার সাজ

কেউ কখনো দেখেছে এত আলো
কেউ কখনো জ্বেলেছে এত আলো

কেউ কি ধরা বেসেছে এত ভাল
আর কাউকে বেসেছি এত ভাল...

শুক্রবার, ৩ আগস্ট, ২০১২

শ্রাবন ধারা ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জ্জী


শ্রাবন ধারা                                                   

আজি শ্রাবন ধারায় বসিয়া আছি তোমার পথ চাহিয়া
তুমি আসিবে বলিয়া মন আমার ওঠে গান গাহিয়া
একি অবিশ্রান্ত ধারা চিত্তে যাগায় পুলক আমায় 
বর্যা  মুখর দিবসে বসিয়া আমার  ই আঙ্গিনায় ।।
একি ক্লান্ত বিসম দিবস রজনি যায় যে বোহিয়া
নাহি মানে কভু কোন বাধা কোন বাঁধনের হিয়া
আঁকি তোমারি  চিত্র নিত্য আমার মানস পটে
উত্থাল যৌবনের উন্মত্তো হৃদয় প্রেক্ষাপটে 
নাহি কভু ভুলি জাতনা বিরহের বহ্নি শ্রোতে  ।
একি ঘন মেঘের আচ্ছাদনে আন্ধার রাতে
গুনি মুহুর্ত প্রহরগুলি যায় অনিদ্রার রাতে ।।
তুমি আসিবে বলিয়া মন আমার ওঠে গান গাহিয়া
আজি শ্রাবন ধারায় বসিয়া আছি তোমার পথ চাহিয়া
                          ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জ্জী
                     ০৩.০৮.২০১২ /সকাল০৯.০৮