শুক্রবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১২

কবি আলি প্রান এর কবিতা

শিউলী কুড়ায়ে দিচ্ছি বুড়ির কোলে
আনন্দে বুড়ির নেচে ডানে বায়ে দোলে
শিউলীর চেয়েও মধুর বুড়ির হাসি
বুড়িকে আমি সবচেয়ে ভালোবাসি

সকালের রোদে উঠানে বিচানা পাতি
বুড়ির পাশে ছড়া আর গানে মাতি
গান শুনে বুড়ি প্রাণখোলা হাসি হাসে
আমাকে বুড়ি সবচেয়ে ভালোবাসে

নরম রোদের গামলা ভরা পানি
বুড়ির জন্য প্রতিদিন আমি আনি
পানিতে বুড়ি নেচে নেচে স্নান করে
বুড়িকে আমার সবচেয়ে মনে পড়ে

বুড়ির গায়ে সরিষার তেল মাখি
সারাবেলা তাকে বুককোলে তুলে রাখি
বুড়ি আমার নাক কান চুল টানে
বুড়ি আছে আমার মনে প্রাণে

হেলে দুলে বুড়ি একপা দুপা হাটে
দুচোখে তার হাজার স্বপ্ন কাটে
একটু হেঁটেই হেসে আত্মহারা
মানিক ঝরা হাসিও প্রাণকাড়া

বুড়ি আমার পিঠের পরে চড়ে
দুই হাতে সে দুইকান চেপে ধরে
ভয় পেলে জড়িয়ে ধরে গলা
কাঁধে বসিয়ে ঘোড়া ঘোড়া খেলা 


রাতের আঁধারে আমি টের পাই
বুকের ভেতরে তপ্ত দিবাকর
গ্রাসীছে প্রেমের গ্রহিকাকে
কালোগহ্বরে ছুড়ে ফেলি নিজেকে
দূরানুভূতিতে টের পাই
আমি নিঃস্ব নই, বুকে রয়ে গেছে
তোমার ভালোবাসার আবেশ

আলোকিত শ্মশানের শেষ মাথায়
জ্বালিয়ে আপন প্রভাতীর চিতা
জীবনে এনেছি চির সন্ধ্যা
নিশিরে বড্ড কাছে চাই, ঘৃণা করি চাঁদকে
আলো দেয় বলে
ওগো, অমানিষাই আমার সব

কৃষ্ণকায়ার জটিলতায়
নিরতঙ্ক মনের সেচ্চাচারিতায়
গ্রহান্তরের পথে ছুটছি
থামেনি হৃদয় দমেনি তেজ
মৃত্যুভয় করেনি আলিঙ্গন
আঁধারেরে বড় ভালোবাসি
কারণ প্রভাতী আমার নাই

প্রেমাতঙ্কের দিনে স্মরণে রাখি
প্রণয় পার্থীর আকুল প্রার্থণা
নিয়তি নামে অভিষাপ ঢালি
ললনা জাতির মোহনীয়তাকে
অথচ ভুলটাই আমার
স্বকীয়তার নির্লজ্জতা ঢাকতে
প্রভাতীদের অভিষাপ দিয়ে যাই

কবি 'আলি প্রান' এর কবিতা 

হাজার স্বপ্নের মাঝে ডুবে থাকার চেয়ে
বাস্তবের একটুকরো খড়ের আশ্রয়ই শ্রেয় নয়কি!
যতই ভালোবাসুক মনালিসা, যাযাবর মেয়ে
নেচে গেয়ে মন মাতায়, কভু আপন হয়কি!

বুকের ভেতর নুপুরের ধ্বণি, রিনিঝিনি বাজে
ঠোঁটের প্রাণহরা হাসি, বিষের পেয়ালা
নিজেকে ভুলে পড়ে থাকি মনালিসা মাঝে
হায় মেয়ে, ভালোবেসে দিলে একবুক জ্বালা 


শেষ বিকালের উত্তরী হাওয়ায় ভর করে আসা শীত সন্ধ্যার প্রকৃতিকে আড়াল করার ষড়যন্ত্র করে। রাতে ভূতুড়ে চাঁদ আকাশে একা পড়ে রয়। মানুষজনসহ বন্য প্রাণীকুল শীতে কম্পমান। বুড়ো হুতোম চাঁদের সঙ্গে মিতালী পাতে, শীতে বিত্তশালীদের সুখনিদ্রা আর বিত্তহীনদের শোকনিদ্রা। কুয়াশার চাদর জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ে প্রকৃতি, বাতির ম্লান আলোয় ঘুমায় শহর, বেদনাময় নির্ঘুম রজনীময় কেঁপে আর্তনাদ তোলে পথশিশু, বস্ত্রহীন হতদরিদ্র চরবাসী, উত্তরাঞ
্চলের মঙ্গাকবলিত মানুষ। ক্ষুধার যন্ত্রণার সঙ্গে যোগ দেওয়া শীত যন্ত্রণা, যারা যন্ত্রণা বোঝে, মানুষের কষ্ট অনুভব করে, যাদের মানবতাবোধ এখনো আছে, তাদের প্রতি আহ্বান, আসুন মানুষের পাশে দাঁড়াই।

চাই শীতের শুরুতেই যেন শীতবস্ত্র সেই নিরন্ন মানুষের হাতে পৌঁছে। আগে থেকে শীতবস্ত্র, চাঁদার টাকা সংগ্রহ করা জরুরি। শীতের মাঝামাঝি সময় উদ্যোগ নিলে বিলি করতে করতে শীত শেষ হয়ে যায়। তাই এখনি শুরু করা উচিত।আমাদের প্রদত্ত অনেক বস্ত্রই নামেমাত্র বস্ত্র। এটা কখনোই উচিত নয়। বস্ত্র প্রদান অনুষ্ঠানে পোশাক দানের সময় ক্যামেরার ফ্লাশ আর দানকারীর হাসিতে কোনো সহানুভূতির চিহ্নও কি থাকে! আমাদের মানবতাবোধ আরো গভীর হওয়া প্রয়োজন। যাকাতের কাপড়ের মতো নিকৃষ্ট শ্রেণীর বস্ত্র দানের চেয়ে না দেওয়াই ভালো। অনেক ক্ষেত্রে কম্বলগুলো আকারে অত্যধিক ছোট। সবকিছুতে খেয়াল না রাখলে সেবা, সেবা হয়ে ওঠে না। কম হোক, তবু যেন ভালোটাই সবাই পায়। আমাদের এখনই মাঠে নামা উচিত। নীরবে-নিভৃতে, সবার আগে শীতার্তের পাশে। শীতে যেন কেঁপে না ওঠে আরেকটি প্রাণ। সবার জন্য ভালোবাসা।
আমি শিমুল ভালবাসি
তুমি রক্ত জবার লাল
বুকের রক্ত ভালবাস
আমি বুঝিনি কোন কাল!

তোমার পলাশ রাঙ্গা ঠোঁট
ঠোঁটে রক্ত পিয়াসা
প্রাণের ছন্দ পান করে
মেটাও প্রাণের পিপাসা

তোমার মায়ায় ঘেরা চোখে
দেখি মন্ত্র ভয়ানক
তোমার সব চাতুরী বুঝেও
আমি সাজি আহ্মক


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন